যুক্তরাষ্ট্রে গুগলের বিরুদ্ধে চলমান অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় বুধবার (৭ মে) গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দেন অ্যাপলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (সার্ভিসেস) এডি কিউ। তিনি জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) সার্চ ইঞ্জিন ভবিষ্যতে গুগলের একচেটিয়া আধিপত্যে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এআই সার্চ প্রযুক্তি গুগলের বিকল্প হিসেবে যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে জানা যায়, বর্তমানে অ্যাপল ও গুগলের মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে, যার আওতায় গুগল অ্যাপলকে প্রতিবছর প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার দেয় সাফারিতে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন থাকার জন্য। এই চুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যে আদালত রায় দিয়েছে যে, গুগলের এমন চুক্তি প্রতিযোগিতাবিরোধী। যদিও কিউ আদালতে জানান, এআইয়ের দ্রুত বিকাশের ফলে সেই একচেটিয়াবাদে পরিবর্তন আসতে পারে।
কিউ বলেন, আমরা একটা টুথপেস্ট কোম্পানি না, যে চিরকাল একই রকম থাকবে। প্রযুক্তি বদলায়। যেমন এক সময় আইপড খুব জনপ্রিয় ছিল, কিন্তু আজ সেটা ইতিহাস। তেমনি ভবিষ্যতে আইফোনও অপ্রয়োজনীয় হয়ে যেতে পারে। তিনি জানান, অ্যাপল প্রযুক্তির পরিবর্তনকে বরাবরই গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে এবং সেই ধারাবাহিকতাই বজায় রাখছে।
তিনি বলেন, যদিও এখনকার এআই সার্চ টুলগুলো গুগলের সমকক্ষ নয়, তবে ভবিষ্যতে শক্তিশালী প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারে। নতুন প্রজন্মের এআই স্টার্টআপগুলো সমস্যাটিকে ভিন্নভাবে দেখছে। ওদের মধ্যে থেকেই গুগলের প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বী উঠে আসতে পারে।
সাক্ষ্য দেয়ার সময় কিউ জানান, অ্যাপলের সাফারি ব্রাউজারে সাম্প্রতিক সময়ে সার্চ ভলিউম কমেছে। ব্যবহারকারীরা এখন অনেকেই গুগলের পরিবর্তে এআই চ্যাটবট ব্যবহার করছেন। তিনি বলেন, গত ২২ বছরে এই প্রথম আমরা এমন হ্রাস দেখলাম। এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
এআই নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি কিউ গুগলের সঙ্গে চুক্তির পক্ষেও যুক্তি দেন। বলেন, বর্তমানে গুগল এখনো সবচেয়ে ভালো সার্চ সেবা দেয়। তাই আমাদের ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা ঠিক রাখতেই এই চুক্তি অব্যাহত রয়েছে।
তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই চুক্তির ফলে অ্যাপলের নিজস্ব সার্চ সেবা গড়ে তোলার আগ্রহে ভাটা পড়েছে, যা প্রতিযোগিতা হ্রাস করেছে। এডি কিউ এই বিষয়ে বলেন, আমরা সব কিছু করতে পারি না। তবে ভবিষ্যতে এআই যদি আরও শক্তিশালী হয়, তাহলে পুরো খেলাই পাল্টে যেতে পারে। প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, এই মামলার রায় শুধু গুগল নয়, বরং অ্যাপলসহ অন্যান্য প্রযুক্তি জায়ান্টদের কৌশল নির্ধারণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।