শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

৮ মাসে ৮ যুদ্ধ থামিয়েছি, ট্রাম্পের দাবি কতটা সত্য

অনলাইন ডেস্ক
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৯ বার

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজের ভূমিকা নিয়ে ফের আলোচনায় রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৩ অক্টোবর) গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সইয়ের পর তিনি দাবি করেছেন, ‘আট মাসে আটটি যুদ্ধ মিটিয়েছেন।’ তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও সংবাদমাধ্যমের তথ্য বলছে, এই দাবি অনেকটাই অতিরঞ্জিত।
সোমবার মিসরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে ট্রাম্পসহ একাধিক বিশ্বনেতা গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করেন। এটি ইসরায়েল ও হামাসের দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছে এবং এটিকে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করে অনেকেই চুক্তিটিকে ‘দশকের সেরা কূটনৈতিক সাফল্য’ হিসেবে দেখছেন। তবে ট্রাম্পের ‘আট যুদ্ধের সমাধান’ দাবি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
ট্রাম্পের দাবির পেছনে আংশিক বাস্তবতা বা সত্যতা রয়েছে। তিনি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েল–ইরান, ভারত–পাকিস্তান এবং আর্মেনিয়া–আজারবাইজানের মধ্যে সীমিত যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ভূমিকা রেখেছেন বলে জানা গেছে। এসব চুক্তি স্বল্পমাত্রায় উত্তেজনা কমালেও তা পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তি নয়-বরং অস্থায়ী বা ধাপে ধাপে হওয়া সমঝোতা।
এমনকি সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দেশের নেতারা ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তাদের অনেকে মনে করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবদান অতিরঞ্জিতভাবে তুলে ধরা হচ্ছে।
আফ্রিকার কঙ্গো ও রুয়ান্ডার মধ্যে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় গত জুনে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও ওই অঞ্চলে সহিংসতা এখনও চলছে। সেখানে শান্তি ফিরে আসেনি। চুক্তির পর শতাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
একইভাবে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে ট্রাম্পের উদ্যোগে সই হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও দুই দেশ একাধিকবার একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে, যার ফলে সীমান্তে সহিংস সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে ।
মিশর ও ইথিওপিয়ার মধ্যে নীলনদের বাঁধ নিয়ে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা থাকলেও সেটি এখনো কূটনৈতিক বিরোধ হিসেবেই সীমাবদ্ধ, সর্বাত্মক যুদ্ধের পর্যায়ে কখনও যায়নি। কসোভো ও সার্বিয়ার ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে বাস্তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।
গাজা যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিতে ট্রাম্পের ভূমিকা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই সমঝোতা বহু ধাপে বাস্তবায়িত হবে, তাই এটি টিকে থাকবে কি না-তা সময়ই বলে দেবে। এখানে আংশিক সফলতা দেখা গেলেও ভবিষ্যতে শান্তি টিকবে কি না তা অনিশ্চিত।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ট্রাম্পের এই প্রচারণা মূলত তার ‘কূটনৈতিক সাফল্যের প্রচারণা’। তারা বলছেন, ‘ট্রাম্প কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেছেন, কিন্তু ‘আট যুদ্ধ মিটিয়ে ফেলা’-এ দাবি বাস্তবতার সঙ্গে যায় না।

আমাদের সাথেই থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই জাতীয় আরো খবর

Categories