সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন হেলেনা (ছদ্মনাম)। তিনি জানিয়েছেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হয় তরুণীদের। বাংলাদেশ থেকে শুরু হওয়া এই চক্র নির্বিঘ্নে চলছে। হেলেনা বলেন, “আমাকে এবং আমার বান্ধবীকে চাকরির মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাঠানো হয়েছিল। দেশে ফিরলেও আমার বান্ধবী নীলা এখনো আটকা। পাচারকারীরা এখন আমাকে ব্যবহার করে আরও তিন-চারজন তরুণী পাঠাতে চাচ্ছে। আমি চাই না আর কোনো মেয়ে এমন প্রতারিত হোক।”
চক্রটি নেতৃত্ব দেন আব্বাস মোল্লা। তার প্রধান সহযোগী সিলভী নামের এক নারী। অন্যান্য সদস্যের মধ্যে আছেন জাহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু, আকাশসহ আরও কয়েকজন। তারা সাধারণত অসহায় দরিদ্র পরিবারের সুন্দরী তরুণীদের টার্গেট করে। পাসপোর্ট, ভিসা এবং ইমিগ্রেশনসহ সবকিছুই চক্রটি পরিচালনা করে।
চক্রের সদস্যরা তরুণীদের চাকরির জন্য প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাঠায়। সেখানে তাদের বিক্রি করা হয়। একেকজনকে প্রায় ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, মামলা করলেও তারা উল্টো বিপদের মুখোমুখি হন।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাচারকারী চক্রের সিন্ডিকেট অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা টার্গেট করা তরুণীদের পাসপোর্ট করে মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে। সাধারণত পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া পাসপোর্ট দেওয়া হয় না। কিন্তু চক্রের সদস্যরা ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে পাসপোর্ট এবং ভিসা দ্রুত পেয়ে যান। ইমিগ্রেশনেও তাদের কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় না।
পাচারকারীরা পাসপোর্ট অধিদপ্তর, ভিসা সেন্টার ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ম্যানেজমেন্ট করে কাজ চালাচ্ছেন। এর ফলে সাধারণ মানুষকে অপেক্ষা করতে হয়, অথচ ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে বিদেশে পাঠানো হয়।
মামলা: বুধবার শাহ আলী থানায় চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ সুলতান মাহমুদ জানিয়েছেন, “চক্রের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে তাদের ধরার চেষ্টা চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। আশা করছি, শিগগিরই আইনের আওতায় আনতে পারব। এজাহারে লিঙ্গ ও পেশা সম্পর্কিত বিষয় ঠিক করে দেওয়া হবে।
Leave a Reply