গাজীপুর মহানগর টঙ্গীর ৫৭ নং ওয়ার্ডে পুরাতন বাজার হিসাবে পরিচিত টঙ্গী বাজার। এই বাজারটি প্রতিবছর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে ইজারা দেয়া হয়। ইজারাদারসহ তাদের নিয়োগকৃত লোকজন সিটি কর্পোরেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের ইচ্ছা মতো ইজারার নামে প্রতি শনিবার গভীর রাতে এবং রোববার দিনে প্রকাশ্যে সাধারণ ব্যবসায়ীদের থেকে হরিলুট করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা । যেন দেখার কেউ নেই ?
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বউ বাজারস্থ চৌরাস্তা মোড় থেকে গুহাটা এবং টঙ্গী বাজারের অলিগলিসহ হাজিমার্কেট, বাজার বড় মসজিদ রোড, নোয়াখালী পট্রি, বউ বাজার রোডে প্রতি শনিবার রাত ১০ টা থেকে রবিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত চলে বিভিন্ন কাপড়ের ক্রয় বিক্রয় । এছাড়া ভোর রাত থেকে হোন্ডা রোড, সেনাকল্যাণ ভবনের সামনে, গুহাটা মোড়ে বসে গরু, ছাগল, হাস মুরগীসহ পশুপাখির হাট। শনি ও রবি ২৪ ঘন্টার এ হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্য এনে এখানে ক্রয় বিক্রয় করে পাইকারী এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা। অথচ খাজনা উত্তোলনের নামে তাদের উপর চলে অত্যাচারের স্ট্রিমরোলার, হাতিয়ে নেয়া হয় খাজনার নামে অতিরিক্ত টাকা।
সূত্রমতে, সিটি কর্পোরেশনের ইজারার একটি আইন থাকলেও ইজারাদাররা সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো ইজারার টাকা আদায়ের নামে দ্বিগুন টাকা উত্তোলন বা ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অতিরিক্ত টাকা হরিলুট বা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইজারাদাদের লোকজন প্রতিটি দোকান থেকে ইজারার নাম করে রশিদ বিহীন ৬ শত টাকা আদায় করছে। এছাড়াও দোকাদারদের নিকট থেকে আদায় করা হচ্ছে বিট ভাড়া বাবদ ৫ শত থেকে ১ হাজার টাকা। ঝাড়ুদার, নাইট গার্ড, হিজরাদের নামে আদায় হচ্ছে আরো প্রায় ২ শত টাকা, সব মিলিয়ে প্রতিটি দোকানদার নিকট থেকে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা নিচ্ছে উজারাদার নামের কসাই চাদাবাজরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দোকানদারগণ জানান, আমরা প্রতি শনিবার রাতে কাপড় বিক্রয় করতে টঙ্গী বাজারে আসি। আমরা সিটি কর্পোরেশন এর রাস্তার উপর ২/৩ হাত জায়গার উপর দোকান বসিয়ে কাপড় বিক্রয় করি কিন্তু বর্তমান ইজারাদারগনরা তাদের ইচ্ছে মতো ইজারার টাকা আদায় করে থাকে। আমরা যদি টাকা দিতে একটু দেরি করি তাহলে আমাদের উপর নির্যাতন চালায় ইজারাদারদের লোকজন। আমরা ভয়ে তাদের চাহিদামত যা চায় তাই দিয়ে দিতে বাধ্য হই।এমনিতেই বেচাকেনা কম। তার উপর এমন অত্যাচারে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ। বর্তমানে আমাদের একটি দোকানের ইজারা বাবদ ৬ শত টাকাসহ মোট ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছ। এভাবে চলতে থাকলে এই বাজারে আমাদের আর মালপত্র নিয়ে আসা হবে না।
কারা জড়িত এই চাদা আদায়ে জানতে চাইলে, ব্যবসালীরা জানান, জেনে কি করবেন, আপনাদের সাংবাদিক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা সকলেই নাকি টাকা নেয়।
এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এর সম্পত্তি কর্মকর্তা নুরুজ্জামান মৃধার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টঙ্গী বাজার ইজারা দেওয়া হয়েছে সরকারি নিয়ম মেনে, সিটি কর্পোরেশনের যে সকল বাজার ইজারা দেওয়া হয়েছে, তারা সিটি কর্পোরেশনের সরকারি নিয়ম মেনে খাজনা আদায় করবে। সরকারি নিয়মের বাহিরে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করার অভিযোগ পেলে অবশ্যই সেই ইজারাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। (চলবে)
Leave a Reply