দেশে ৪ বছরে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে এইডস রোগী। এ বছর এইচআইভি পজেটিভ শনাক্ত রেকর্ড প্রায় দেড় হাজার। যাদের প্রায় অর্ধেকই সমকামী। সংক্রমিতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ শনাক্ত ৪০৬ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এমন তথ্য। এ বছর এইডসে প্রাণ গেছে ১শ’ ৯৫ জনের।
ছদ্মনাম চয়ন সিংহ। কাজের প্রয়োজনে পরিবার ছেড়ে রাজধানীতে একটি মেসে থাকতেন। সেখান থেকেই নিজেকে আবিষ্কার করেন ঝুঁকিপূর্ণ পুরুষ হিসেবে। বছর খানেকের মধ্যেই ধরা পড়ে এইডস।
প্রথমে ভীষণ মুষড়ে পড়লেও এখন অনেকটাই সামলে নিয়েছেন। নিয়মিত ওষুধ খেয়ে কিছুটা ভালোও আছেন। তবে পরিবার থেকে হয়ে পড়েছেন বিচ্ছিন্ন।
চয়ন সিংহ বলেন, ওইদিন আমার ওপর যেন আসমান ভেঙে পড়েছিল। হয়ত আমি না বুঝে করছি।
তারার গল্প কিছুটা ভিন্ন। ১৫/১৬ বছর বয়সে তার পরিবার প্রথম জানতে পারে তিনি হিজড়া। এরপর থেকে হিজড়াদের ডেরায় যাওয়া আসা তার। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন যৌনকর্মী হিসেবে। ১৪ বছর আগে জানতে পারেন, তিনি এইচআইভি আক্রান্ত। এমন পরিণতির জন্য দায়ী মনে করেন নিজেকেই।
তারা বলেন, এখন আমি অনুভব করি। অনুশোচনা হয়, যদি একটু আমি সচেতন হতাম, তাহলে এ দুর্ঘটনাটা হতো না। এখন চলতেছে কাজ করতেছি, খাইতেছি। পেশাটাও ছাড়ার চেষ্টা করতেছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রতি বছরই বাড়ছে এইডস রোগী। ২০২০ সালে নতুন করে শনাক্ত হন ৬৫৮ জন। যেই সংখ্যাটা চলতি বছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৩৮ জনে। যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ নারী-পুরুষই আক্রান্ত বেশি, এরপরেই হিজড়া জনগোষ্ঠী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিবিএল এন্ড এএসপি লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, বেশি হচ্ছে যারা শিরায় মাদক গ্রহণ করে, সমকামী এবং হিজড়া। এদের মধ্যে এই সংক্রমণের হারটা বেড়ে যাচ্ছে। আমার কাছে মনে হয় যে, আমরা এইচআইভি/এইডস সম্পর্কে যতবেশি প্রচার-প্রচারণা চালাবো ততই এর আক্রান্তের হার কমে আসবে।
সঠিক সময়ে শনাক্ত হলে আর পর্যাপ্ত চিকিৎসা নিলে দীর্ঘদিন এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই এ রোগ সনাক্তে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply