বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০১:৪৩ অপরাহ্ন

হত্যা না ক্যান্সারে নিহত ? নান্দাইলে গৃহবধূর মৃত্যুরহস্য নিয়ে ধুম্রজাল

মৃণাল চৌধুরী সৈকত
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৬৮ বার

তিনি গৃহবধু বটে। কিন্তু তিনি কি মাদ্রাসা ছাত্রী নাকি স্কুল ছাত্রী ? ছিলেন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ততাপি ছাত্রী পাপিয়ার সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে নান্দাইল থানার সিংড়ইল ইউনিয়রের কচুরি চরপাড়া গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে হোসাইনের। প্রেমের সূত্রধরে মেয়ে ও ছেলের পালিয়ে যাওয়া। তারপর গোপনে বিজ্ঞ আদালতে কোর্ট এফিডেবিটের মাধ্যমে বিয়ে। বিষয়টি জানাজানির পর মেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলে পক্ষের নামে একের পর এক মামলা। শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গৃহবধুর অকাল মৃত্যুর পর মেয়ের পরিবারের লোকজনের দ্বারা ছেলের পরিবারের লোকজনের নামে সাজানো হয় উদ্দেশ্য প্রণোদিত হত্যা মামলা। এতে করে দুটি পরিবারের মধ্যে সৃষ্টি হয় হিংশ^া ও প্রতিহিংশ^া। বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা হলেও দীর্ঘদিনেও হত্যা মামলার রহস্যজট খুলতে পারছেন না নান্দাইল থানা পুলিশ। পুলিশের দাবী ভিসেরা রির্পোট না আসা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না, গৃহবধুর মৃত্যুরহস্যটি হত্যা নাকি ক্য্সাারে আক্রান্ত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, একই পিতার ঔরশে জন্ম নেয়া পাপিয়া আক্তার অসুস্থ থাকা অবস্থায় মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেম করে পাশর্^বতী গ্রামের যুবকের সাথে। তারপর ১ জুন ২০২৪ ইং পালিয়ে যাওয়ার পর প্রায় সাড়ে চার মাস অতিক্রান্তের পর জেলা ময়মনসিংহের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মেয়ে বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে তার মেয়ে স্থানীয় বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমী এন্ড স্কুলেরর দশম শ্রেনীর ছাত্রী এবং স্কুল থেকে ফেরার পথে গত ১ জুন ২০২৪ ইং শনিবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় বিবাদী মো, হোসাইনসহ তার সহযোগীরা অপহরণ করে মর্মে মামলা নং ২২৫/২০২৪ ইং ধারা : নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ [সংশোধনী ২০২৩] এর ৭/৩০ রজু করেন। অথচ ১ জুন ২০২৪ মেয়েটি পালিয়ে যাওয়ার পর মেয়েটির পিতা বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় একাধিক লোকজন নিয়ে ২দিন পর ছেলে পক্ষের অভিভাবদের দারস্থ হন এবং জানান, তার মেয়ের শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে, টাকার অভাবে সঠিক ভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অনেক কষ্টে সম্প্রতি মেয়েটির টনসিল অপারেশন হয়েছে এবং খুবদ্রুতই নাকের পলিপাস ও ব্রেইন টিউমার অপারেশন করতে হবে। কিন্তু অর্থনেতিক সংকটের কারনে তা করতে সময় লাগবে। এ অবস্থায় মেয়েটি ছেলের নিকট চলে আসায় আমি বা আমার পরিবারের সদস্যরা খুবই চিন্তিত। এসব বলে মো. আবুল কালাম মেয়েটিকে তার জিম্মায় নিয়ে যায়। জিম্মায় আসার পর পিত্রালয়ে এসে মেয়েটি জানায়, গত ৩০ মে ২০২৪ইং দু-জন পালিয়ে গিয়ে কিশোরগঞ্জ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে বিয়ে করে। এর একদিন পর কাজীর মাধ্যমে নিকাহ রেজিষ্ট্রিও কওে তারা। মো. হোসাইনের সাথে তার বিয়ে হয়ে গেছে। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়ে পিতা আবুল কালাম কুব্ধ হয়ে মেয়েকে মারধর করেন। পরে আবুল কালাম ও তার স্বজনরা সমাজে মান-সন্মাণ রক্ষার্থে ফন্দি আটে, যেকোন মূল্যে মেয়ের জামাইকে তাদের হেফাজতে আনতে হবে। সেই সূত্রমতে, মেয়েকে দিয়ে ফোনের মাধ্যমে ছেলেকে ডেকে নিয়ে তাদের বাড়িতে আশ্রয় দেন। এভাবে বেশ কিছুদিন যাবার পর গ্রামের কিছু কুচক্রিমহলের পরামর্শে ছেলেটিকে আটক করে এবং ছেলেকে চাপ দেয় তার স্ত্রী পাপিয়া আক্তারকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এক পর্যায়ে হোসাইন তার স্ত্রীকে নিয়ে নারায়নগঞ্জে চলে যায়। সেখানে তারা পোষাক কারখানায় চাকুরির সুবাধে বেশ কয়েক মাস বসবাস করার পর পাপিয়ার পুরোনো রোগটি ফের দেখা দেয়। এ কারনে তার ডান চোখটি অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে বেরিয়ে পড়ে। ওই সময় স্বামী হোসাইন নারায়নগঞ্জে পাপিয়ার চিকিৎসা করেন। এরই মধ্যে পাপিয়ার অবস্থার অবণতি হতে দেখে এবং চিকিৎসা খরচ ব্যয়বহুল হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মিলে আবুল কালামের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানান, তখন পাপিয়া পিতা আবুল কালাম উন্নত চিকিৎসার জন্য তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানাধীন বাকচান্দাস্থ নারায়নপুর গ্রামে চলে আসার কথা বলেন। সে মতে হোসাইন তার স্ত্রীকে গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং শ^শুড়ালয়ে দিয়ে আসার কয়েকদিন পর মেয়েটি আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে বাকচান্দা পল্লী চিকিৎসক ও পরে ময়মনসিংহের চরপাড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পরিক্ষা-নিরিক্ষাসহ চিকিৎসা করেন এবং এসময়কালেই মামলাবাজ আবুল কালাম উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বিজ্ঞ আদালতে উদ্দেশ্যমূলক মেয়ের জামাই হোসাইনের বিরুদ্ধে উপরোক্ত অপহরণ মামলা করে মেয়ের জামাইকে হয়রানী শুরু করেন।
এদিকে মেয়ে পাপিয়া আক্তারের শারীরিক অবস্থার অবণতি হলে পিতা নামমাত্র চিকিৎসা করানোর ফলে মেয়ের শরীরে মরণব্যাধি ক্যান্সারে বাসা বাধে চিকিৎসা নেয়া হাসপাতালের ডাক্তার সূত্রে জানা যায়।
স্থানীয় বাদল মিয়া জানান, পাপিয়া বিয়ের আগে থেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, গ্রামবাসীর কাছে শোনেছি আবুল কালামের মেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে তবে সে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। বাপের বাড়িতে চিকিৎসারত থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। অথচ ছেলে পক্ষের নামে ভূয়া দুটি মামলা করেছে মেয়ে বাবা। এসব মামলা কে বা কার পরামর্শে করেছে আমার জানা নেই।
স্থানীয় মুরব্বী এবং ময়মনসিংহ চরপাড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজধানী ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালসহ রাজধানী ঢাকার মিরপুর-১ এর ডেলটা প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পাপিয়া আক্তার পড়াশোনা করাকালীন তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এবং মাথায় টিউমার পরিলক্ষিত হয়। সময়মত উক্ত টিউমারের সু-চিকিৎসা না করায় টিউমার ফেটে গিয়ে সেটি ক্যান্সারে পরিণত হয়। কিন্ত পাপিয়ার বাবা আবুল কালাম সেসব তথ্য গোপন করে মেয়েকে গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং মেয়ের জামাই হোসাইনের মাধ্যমে তার গ্রামের বাড়িতে আনার পর দীর্ঘদিন বাড়িতে রেখে সঠিক চিকিৎসা না করে মেয়ের জামাইসহ তার পরিবারকে ফাসানোর বিভিন্ন পরিকল্পনা করেন। যার তথ্য পাওয়া যায়, স্থানীয় ভাবে একাধিক লোকজনের সাথে কথা বলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়নপুর গ্রামের বেশ কিছু মুরব্বীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মেয়েটি স্থানীয় বাকচান্দা ফাজিল মাদ্রাসায় দাখিল শ্রেনীতে লেখাপড়া করলেও তার পিতা আবুল কালাম মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্যদিয়ে অপহরণ মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, তার মেয়ে স্থানীয় বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমী এন্ড স্কুলের দশম শ্রেনীর ছাত্রী ছিলো। এছাড়া মেয়েটি বেশ কয়েক বছর যাবৎ শারিরীক ভাবে অসুস্থ এবং তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে টিউমারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলো যা গ্রামের সবাই জানেন। পিত্রালয়ে থাকা অবস্থায় পাপিয়া আক্তার সু-চিকিৎসার অভাবে গত ১৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করলে তার পিতা আবুল কালাম পূণরায় উদ্দেশ্যমূলক এবং স্থানীয় ও নান্দাইলের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির শলাপরামর্শে নান্দাইল থানায় ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং ৬ জনকে এজাহার নামীয় অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা নং-৬, ধারা ৩৪১/৩০২/৩৪ প্যানাল কোড-১৮৬০ মোতাবেক রজু করেন। উক্ত মামলার এজাহারে তিনি সত্যঘটনা ও মেয়ের বিবাহের কথা গোপন রেখে উল্লেখ্য করেন, তার মেয়ে বাকচান্দা ফাজিল মাদ্রাসার দাখিল শ্রেনীর ছাত্রী গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং শনিবার সন্ধ্যা ৫টায় তার মেয়ে পাপিয়া বাড়ির পাশে জনৈক স্বপন মিয়ার দোকান থেকে কয়েল কিনে বাড়ি আসার পথে মামলার অভিযুক্তরাসহ আরো কয়েকজন মিলে পথরোধ করে বেদড়ক মারধর পূর্বক চোখের কর্ণিয়ায় নষ্টসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন এবং অভিযুক্তরা সকলে মিলে দুই কিলোমিটারের উপরে একজন অভিযুক্ত আসামীর বাড়ির এলাকায় আহত পাপিয়াকে নিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে রাখেন। পরে মেয়ে বাবাসহ আত্বীয় স্বজনরা খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টায় উপরোক্ত স্থান থেকে মেয়েকে উদ্ধার করেন এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবণতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি তার মেয়ে পাপিয়াকে রাজধানী ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালসহ রাজধানী ঢাকার মিরপুর-১ এর ডেলটা প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন এবং ৮ ডিসেম্বর তিনি তার মেয়ে পাপিয়াকে বাড়ি নিয়ে আসেন। এজাহারে সর্বশেষ তিনি উল্লেখ করেন, বাড়িতে রেখে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করাকালীন তার মেয়ে পাপিয়া আক্তার গত ১৬ ডিসেম্বর সোমবার বেলা সাড়ে ১২ টায় মৃত্যু বরণ করেন। আবুল কালামের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠান। আজো অবধি লাশের ময়না তদন্ত রির্পোট না আসায় মামলাটির সুরাহা করতে পারছেন না নান্দাইল থানা পুলিশ বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য : প্রেমের টানে হোসাইনের সাথে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া পাপিয়া নিকাহ রেজিষ্ট্রি করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া এবং স্বামী স্ত্রী হিসেবে তিন মাস একত্রে সংসার করার পর পাপিয়ার শরীরে ক্যান্সার দেখা দিলে স্বামী চিকিৎসা করাতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে পাপিয়ার বাবার কথায় তাকে পিত্রালয়ে দিয়ে আসার পর স্বামী হোসাইনের বিরুদ্ধে অপহরন মামলা করার মূল রহস্য কি ?
স্বামীর কাছ থেকে আসার প্রায় ৩ মাস ১০ দিন পিত্রালয়ে থেকে ক্যান্সার আক্রান্ত পাপিয়া সূ-চিকিৎসা না পেয়ে পিত্রালয়ে মারা গেলেও তাকে অত্যাচার, নির্যাতন ও মারধর করে হত্যার অভিযোগে হোসাইন ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে কার ইন্ধনে ? এ প্রশ্ন নারায়নপুর, ইছবপুর, মহাবৈ, উদং মধুপুর, কচুরী চরপাড়া, বগরী কান্দাসহ আশপাশের সচেতন এলাকারবাসীর।
পাপিয়ার বাবা আবু কালাম বলেন, তার মেয়ের কোনো রোগই ছিল না। হোসাইন ও তার স্বজনদের নির্যাতনের কারনেই সে অসুস্থ হয়েছিলো এবং তার ডান চোখটিও নষ্ট হয়েছিলো। নারায়নগঞ্জ জামাই হোসাইনের সাথে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়ি আনার প্রায় তিন মাস ১০দিন পর মূমূর্যু অবস্থায় গত ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে সে মারা যায়। তাই পাপিয়ার মৃত্যুর জন্য হোসাইন ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
ময়মনসিংহ জেলা বিএমএর সাবেক সভাপতি ডা. মতিউর রহমান ভূইয়া পাপিয়ার মস্তিস্কের সিটিস্ক্যান ও বায়োপাসি পরীক্ষার দুটি রিপোর্ট দেখে বলেন, পাপিয়ার শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু তার মৃত্যুর আসল কারন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না দেখে বলা যাবে না।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মিজানুর রহমানের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নারায়নপুরের একটি ঘটনায় হত্যা মামলা রয়েছে। আমি নতুন এসেছি, ততাপিও ময়নাতদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষা করছি। রির্পোটটি হাতে না আসা পর্যন্ত আমি কোন মন্তব্য করতে পারছি না।

আমাদের সাথেই থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই জাতীয় আরো খবর

Categories