ফেনীর মহিপাল থেকে এক পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনার এক মাসের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বরগুনা জেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট তালতলী এলাকার মো. চাঁন মিয়া (৫০), বড়বগি ইউনিয়নের রিতুল বাড়িয়া এলাকার হেকিম হাওলাদার (৪০) ও বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার বোদারপুর ইউনিয়নের মকিবুল হাসান (৩০)। আজ সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
পুলিশ সুপার জানান, গত মাসের ২৮ তারিখ ওই দম্পতি চট্টগ্রাম যেতে মহিপালে গাড়ির জন্য অপেক্ষারত ছিলেন। এ সময় এই চক্রের সদস্যরা কৌশলে অজ্ঞাতনামা একটি মাইক্রোবাসে উঠায়। পরবর্তী সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপোল পৌঁছানোর পর তাদের গামছা দিয়ে চোখ মুখ বেঁধে জিম্মি করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। তখন এ দম্পতির কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। তাৎক্ষণিক পকেটে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা, ৪২ হাজার টাকা মূল্যের দুটি স্যামসাং ও একটি নকিয়া মোবাইলফোন, ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের একজোড়া কানের দুল হাতিয়ে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে আরও ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাদের নির্যাতনের মুখে বিকাশের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা এনে দেওয়ার পর রাত ১০টার দিকে লালপোল এলাকায় দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পথচারীদের সহায়তায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে তারা ভর্তি হন।
এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যের স্ত্রী হনুফা বেগম বাদী হয়ে ৬ জনকে অজ্ঞাতানামা আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় তিনজনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন।
অপহরণের শিকার ওই দম্পতির বাড়ি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানায়। পুলিশে চাকরির সুবাদে পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া থানায় বসবাস করেন তারা।
পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply