টঙ্গীতে বিদ্যালয়ের মালামাল লুট ও প্রধান শিক্ষককে মারধরের চেষ্টার অভিযোগে বিক্ষোভ করে শাখা সড়ক অবরোধ করে কয়েকশ শিক্ষার্থী। বুধবার দুপুরে টঙ্গীর টিএন্ডটি কলোনি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা সড়কে অবস্থান নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করে। অবরোধে অংশ নেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকরাও। এতে আঞ্চলিক শাখা সড়কটিতে দীর্ঘ গাড়ির জটলা দেখা দেয়।
জানা যায়, গত কয়েক দিন যাবত রাতে বিদ্যালয়টির নৈশপ্রহরীকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে শ্রেণিকক্ষে থাকা ফ্যান, চেয়ার টেবিল, লোহার জানালা ও আলমারি ভেঙে বিদ্যালয়টি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির অর্ধ-বার্ষিকীর প্রশ্নপত্র ও খাতা লুটে নিয়ে যায় স্থানীয় একটি চক্র। পরে লুট হওয়া মালামাল টিএন্ডটি কলোনি এলাকার পুরাতন মালামাল বিক্রির দোকানে বিক্রি করে দেয় চক্রটি।
মঙ্গলবার লুট হওয়া মালামাল ফিরিয়ে দিতে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ওই দোকানে যান। পরে বিকালে কয়েকজন যুবক তাকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিদ্যালয়টির ভেতরে মারধরের চেষ্টা করেন।
এরই প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়টির কয়েকশ শিক্ষার্থী শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবক টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও পুলিশের দেওয়া আশ্বাসে শাখা সড়ক থেকে সরে বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, গত কয়েক দিন ধরেই আমদের বিদ্যালয়ের চেয়ার টেবিল, ফ্যান, বেঞ্চ লুটে নিয়ে যায়। আজ সকালে এসে দেখি আমাদের পরীক্ষা প্রশ্নপত্র ও খাতাও নিয়ে গেছে। প্রধান শিক্ষককে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কিছু যুবক মারতে এসেছিল। আমরা বাধ্য হয়েই বিক্ষোভে নেমেছি।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সদস্য আয়শা সুলতানা শিরিন বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টির ভবন ও মাঠটি সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের দখলে যায়। গত কয়েকদিন আগে আমাদের বিদ্যালয়ের মালামাল নিয়ে যায়। আমাদের শ্রেণিকক্ষে বসতে পারছি না। মঙ্গলবার রাতে আলমারি ভেঙে সব প্রশ্নপত্র ও খাতা নিয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা আজকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।
টিএন্ডটি কলোনি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ বলেন, লুটের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। মঙ্গলবার বিকালে আমাকে মারধরের চেষ্টা করে কয়েকজন যুবক। বুধবার শিক্ষার্থীরা সড়কে গিয়ে বিক্ষোভ করেছে। লুট হওয়া মালামাল ফিরিয়ে আনতে পুলিশের সহায়তা চেয়েছি।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হাফিজ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। পুলিশ ও স্থানীয়রা আমাদের কোনো সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।
গাজীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহজাহান বলেন, এ বিষয় আমার জানা ছিল না। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আমাদের কিছু জানাননি। এখন জানলাম। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি এসএম মামুনুর রশীদ বলেন, খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ করেছেন।
Leave a Reply