ছাত্রদের মধ্যে আর কোনো সংঘাত দেখতে চান না জানিয়ে গণফোরামের চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেছেন, আমরা ছাত্রদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য চাই।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গণফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন।
গণফোরামের চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, আমাদের জাতীয় অনেক সমস্যা, সংকট আছে। যে ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধভাবে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, রুখে দাঁড়িয়েছে, জনগণকে একতাবদ্ধ করেছে, সেই ছাত্ররাই আজকে সংঘাতে জড়াচ্ছে। আমরা এগুলো দেখতে চাই না। আমরা ছাত্রদের একটা জাতীয় ঐক্য চাই। আমরা চাই, ঐক্যবদ্ধ ছাত্রদের ঐক্যের ভেতর দিয়ে আগামী দিনের জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হোক।
তিনি বলেন, সমাজের বিভিন্ন জায়গায়, যেমন- গার্মেন্টস সেক্টরে অরাজকতা তৈরি হয়েছে। এটাতে স্পষ্ট বোঝাই যাচ্ছে পতিত স্বৈরাচারের লোকেরা এর সঙ্গে জড়িত। আবার অটোরিকশা ব্যাপারে আমরা দেখলাম, একবার বলছে চলতে পারবে না, আবার বলছে চলতে পারবে, আবার বলছে মেইন রাস্তায় চলতে পারবে। আমার মনে হয় সিদ্ধান্ত নিতে কোনো গরমিল হচ্ছে। সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার আগে ভালোভাবে জরিপ করে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তারপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যাতে তা পরবর্তীতে পরিবর্তন না হয়।
তিনিআরও বলেন, আজকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষ দাবি-দাওয়া জানাচ্ছে। অবশ্যই তাদের দাবি-দাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু দাবি-দাওয়া যেন ভায়োলেন্সে রূপান্তর না হয়, সংঘাতে রূপান্তর না হয়।
গণফোরামের চেয়ারম্যান মন্টু বলেন, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রামে নির্মমভাবে শহীদ হয়েছেন, আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এটা একটা নৃশংস ঘটনা। কোর্ট চত্বরে একজন আইনজীবীকে হত্যা, এটা অবর্ণনীয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। যারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক এবং তাদের বিচারের সম্মুখীন করা হোক।
সবাইকে ধৈর্যশীল হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে গণফোরামের চেয়ারম্যান বলেন, সংঘাত কখনো কারো উপকারে আসতে পারে না। এতে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ সময় গণফোরামের সম্মেলন প্রসঙ্গে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বর (শনিবার) আমাদের গণফোরামের সম্মেলন। এটার সভাপতিত্ব করবেন আমাদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেন। যেখানে বিভাজনের রাজনীতি চলছে সেখানে আমরা সবাই একমত হয়ে আমাদের দলকে আবার ঐক্যবদ্ধ করেছি। আমাদের মধ্যে আর কোনো বিভক্তি নেই, আমরা এক সঙ্গে কাজ করছি।
এ সময় দলের কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরকার ১০০ দিন পার করে আরও ১০০ দিনের মধ্যে পা দিয়েছে। কিন্তু আমরা দেখছি উচ্চ আদালত নিম্ন আদালত সবখানে অস্থিরতা চলছে। আমরা এ ব্যাপারে কোনো সুষ্ঠু পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। যেটা এক নাম্বারে হওয়া উচিত ছিল। আপনি কাদের উপদেষ্টা বানালেন? সবাই বলে এটা একটা এনজিওগ্রাম সরকার। আমরা এনজিওগ্রাম সরকার চাই না। এতদিন হয়ে গেল আপনি শহীদদের তালিকা করতে পারেননি, তাদের সুচিকিৎসা করতে পারেননি, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারেননি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের কো-চেয়ারম্যান এস এম আলতাফ হোসেন, সমন্বয় কমিটির সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সদস্য সচিব ডা. মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।
Leave a Reply