সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের যে রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ইতোমধ্যে সেই রায়ে এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। তবে এতে দমছেন না আন্দোলনকারীরা। তারা রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলছেন, আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। যতক্ষণ কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার না আসবে ততক্ষণ তারা রাজপথেই থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত ‘বাংলা লকেড’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে শাহবাগসহ বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই সর্বোচ্চ আদালত থেকে এসেছে রায়।
তবে এই রায়ে সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারীরা। রায় আসার পর বেলা ১২টার দিকে শাহবাগে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া কোটা আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ মাইকে ঘোষণা করেন, হাইকোর্ট থেকে আজকে যে রায় আসুক না কেন আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। হাইকোর্টের রায়ে আমাদের আন্দোলন প্রভাবিত হবে না। তারা যতক্ষণ না পর্যন্ত একটা কমিশন গঠন করে আমাদের সব সরকারি চাকরিতে ৫% কোটা নিশ্চিত না করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ছি না। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।
এর আগে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোটা আন্দোলনের নেতারা অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে বলেন- আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। একটি কমিশন গঠন করে সর্বোচ্চ ৫ পার্সেন্ট কোটা রাখতে হবে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির সব চাকরিতে।
২০১৮ সালের অক্টোবরে কোটাবিরোধী আন্দোলন চরম আকার ধারণ করলে সরকার পরিপত্র জারি করে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করে দেয়। ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন পরিপত্রটি বাতিল করে দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
এই রায়ের পর ফুঁসে উঠেন শিক্ষার্থীরা। তারা কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। গত ১ জুলাই থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে জোরালো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে দুই দিন ঢাকায় কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে রাজধানী স্থবির হয়ে পড়ে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা রাজপথ অবরোধ করায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষদের। মাঝে এক দিন বিরতি দিয়ে বুধবার আবারও ব্লকেড কর্মসূচিতে রাজপথে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
Leave a Reply