মার্চের তুলনায় এই মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার কমেছে। মার্চে এই হার ছিল ১১ শতাংশ। এপ্রিলে তা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। এটাকেই তাদের জয় হিসাবে দেখছে প্রেসিডেন্ট মিলেইয়ের অফিস। তিনি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন মাসিক মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ছিল ২৫ শতাংশ। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, মুদ্রাস্ফীতির হার কমানোই হবে তার প্রথম কাজ।
প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। তার মৃত্যু-পরোয়ানায় সই করা হয়ে গেছে।
কিন্তু সরকারি রিপোর্ট বলছে, এপ্রিলে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার দেখানো হয়েছে ২৮৯ দশমিক ৪ শতাংশ।
মিলেই যখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন, তখন আর্জেন্টিনার অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। মুদ্রাস্ফীতিতে আর্জেন্টিনা বিশ্বের শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে একটি।
মিলেই কড়া হাতে অর্থনীতির হাল ধরেন। সরকারি খরচ ও বাজেট ঘাটতির পরিমাণ কম করার চেষ্টা করেন।
তিনি ৫০ হাজার সরকারি চাকরি শেষ করে দেন। সরকারি কাজের জন্য নতুন বরাত দেয়া বন্ধ করেন। তেল ও পরিবহনে ভর্তুকি দেয়া বন্ধ করেন।
আইএমএফ ও বিনিয়োগকারীরা এই সব সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। আইএমএফ মঙ্গলবারই আর্জেন্টিনাকে ৮০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
গরিব ও শ্রমিকরা বিপাকে
বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, অর্থের এই ছাঁটাইয়ের ফলে অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হবে। পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইকনমিক্সের সঙ্গে যুক্ত মনিকা দ্য বলে মনে করেন, মানুষ খরচ করা কমিয়ে দিয়েছে বলে সার্বিকভাবে খরচ কমে গেছে। তাই মুদ্রাস্ফীতির হার কম হয়েছে।
তার মতে, মানুষের অবস্থা আগের থেকে খারাপ হয়েছে। তারা বাধ্য হয়ে খরচ কমাচ্ছে।
মিলেইয়ের সমালোচকরা দাবি করেছেন, তার নীতির ফলে গরিব ও শ্রমিকদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়েছে।
সরকারি তথ্য বলছে, গরিবদের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে। তার সমালোচকদের মতে, খরচ কমানো ও অর্থ না থাকার কারণে এটা ঘটেছে।
২৩ বছর বয়সি সুপারমার্কেটে কাজ করা অগাস্তিন পেরেজ জানিয়েছেন, তার বাড়ির ভাড়া ৯০ শতাংশ বেড়েছে, বিদ্যুতের বিল বেড়েছে ৩০০ শতাংশ।
পেরেজ বলেছেন, মানুষ কষ্টের মধ্যে আছে। ওরা বলছে, পরিস্থিতি ভালো হয়েছে, কিন্তু কোথায় হয়েছে আমি বুঝতে পারছি না।
আর্জেন্টিনার জিডিপি এই বছর দুই দশমিক আট শতাংশ কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আর্থিক মন্দার দিকে যেতে পারে মেসির দেশ।
Leave a Reply