নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী ঢাকা গাজীপুরের মানুষ। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। তবে, মহাসড়কের কোথাও কোথাও খানাখন্দ ও সরু লেনের কারণে যানবাহনের ধীরগতি হলেও সোমবার তেমন যানজট চোখে পড়েনি তেমন।
মঙ্গলবার থেকে সরকারি ছুটি শুরু হওয়ায় পর আশংকা করা হচ্ছে মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে এবং চলবে ঈদ পর্যন্ত। তবে বৃষ্টি হলে খানাখন্দের কারণে যানবাহনের গতি কমে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।এ ব্যাপারে মহাসড়কে যানজট নিরসনে সব ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন সংশ্লিষ্টরা।
এ মহাসড়কের যাত্রীরা জানান, উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের ২৯টি জেলার মানুষের রাজধানী ও গাজীপুরে প্রবেশের দ্বার হলো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ফলে এই মহাসড়কে প্রতিদিন লাখ লাখ পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করে থাকে। ঈদের সময় এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ফলে এ সময়ে যানজটে আটকে চরম ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। গত কয়েক বছর ধরে এই মহাসড়কে বিআরটি প্রকল্প চলমান থাকায় দুর্ভোগ মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুন।
সোমবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী আব্দুল্লাহপুর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কের কিছু অংশে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলায়, কোথাও এক সারিতে কোথাও দুই সারিতে গাড়ি চলছে। আবার কোথাও খানা-খন্দের কারণে যানবাহনের গতি কম। তবে কোথাও তেমন কোন যানজট চোখে পড়েনি।
সড়কের অনেক স্থানে যাত্রী উঠানামার কারণে অন্য যানবাহনের গতি কম। যানবাহনের জন্য খুলে দেওয়া দুটি ফ্লাইওভার দিয়ে না চলাচল করে যাত্রীবাহী অনেক বাস নীচ দিয়ে যাতায়াত করতে দেখা গেছে।
গাজীপুরে ছোট বড় প্রায় চার হাজারের অধিক শিল্পকারখানা রয়েছে। এসব কারখানা সোমবার বিকেল থেকে পর্যায়ক্রমে ছুটি শুরু হয়েছে। ছুটির পরেই মহাসড়কে চাপ বাড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন। আগামী দুদিন গাজীপুর এবং ঢাকার কারখানায় কাজ করা লাখ লাখ শ্রমিক ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বের হবেন। সোমবার ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ দেখা গেছে। মঙ্গলবার যাত্রী ও যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে।
মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী পশুর হাটের কারণে যানজট ও মানুষের ভোগান্তি হতে পারে বলে মনে করছেন চালক-যাত্রীরা। গাজীপুর মহানগরীর মধ্যে এ বছর অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে একাধিক। এর মধ্যে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বসা মালেকের বাড়ি, বোর্ডবাজার, গাজীপুরা ও টঙ্গী রোডে অবস্থিত পশুর হাট।
রোববার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়কে যানজট থাকলেও আজ তেমন নেই। ঢাকাগামী যাত্রীর সংখ্যাও কম। সোমবার সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। এতে জনদূর্ভোগ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে । অধিকাংশ গণপরিবহন উড়াল সেতুর (বিআরটি প্রকল্প) নিচ দিয়ে বাস যাতায়াত করে। এ কারণে সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি। তবে ফ্লাইওভার ব্যবহার করলে সড়কে চাপ থাকবে না।
টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট আওয়াল বলেন, বিআরটি প্রকল্পের রাজধানীর উত্তরা থেকে কলেজ গেট পর্যন্ত উপরে ও নিচের অংশে যানজট নেই। তবে কলেজ গেট, গাজীপুরা সাতাইশ ও বোর্ডবাজার এলাকায় কিছুটা ধীর গতি রয়েছে।’
গাজীপুর মহানগর পুলিশ ও সড়ক বিভাগ সার্বক্ষণিক সড়কে দায়িত্ব পালন করছে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মহাসড়কে যানজট নিরসনে তিন শিফটে পাঁচ শতাধিক পুলিশ সদস্য কাজ করছে। চালকেরা সচেতন থাকলে, যেখানে-সেখানে যাত্রী উঠানামা না করলে যানজট অনেকটা কমে যায়। যে ফ্লাই ওভারগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করলেও যানজটে পড়তে হবে না।
উপ-পুলিশ কমিশনার আলমগীর আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, যানবাহনগুলো যাতে ফ্লাইওভার দিয়ে চলাচল করে। তাহলে যানবাহনের গতি বাড়বে। মহাসড়কের পাশে যেসব পশুর হাট বসেছে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি তারা নির্দেশনা অমান্য করে মহাসড়ক পশুর গাড়ি রাখে বা টানাটানি করে তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply