গত সোমবার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে একজন টঙ্গীর ইমাম হোসেন রনি (৪০)। দুর্ঘটনার খবরে রনির পরিবারে আকাশ ভেঙে পড়েছে। তাদের কান্নায় টঙ্গীর বড় দেওড়ার ফকির মার্কেট এলাকার বাতাস যেন ভারি হয়ে উঠেছে। এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জানা যায়, টঙ্গীর শিল্প এলাকার পশ্চিম থানাধীন বড় দেওড়া ফকির মার্কেট এলাকার বাসিন্দা ইমাম হোসেন রনি তার পরিবার নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরে হলেও ফকির মার্কেট এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করেছেন রনির বাবা আব্দুল লতিফ। সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রনির টঙ্গীর বড় দেওড়া ফকির মার্কেট এলাকার হোল্ডিং নম্বর ৯ হলো বাসা। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইমাম হোসেন রনি দ্বিতীয়।
রনির বোন সীমা আক্তার জানান, পাঁচ বছর হলো রনি সৌদি আরবে থাকেন। দুই মাসের ছুটিতে ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখে দেশে আসেন ও ৭ তারিখে বিয়ে করেন। রনির প্রথম স্ত্রী এক সন্তান রেখে তাকে তালাক দিয়ে চলে যান। রনির প্রথম পক্ষের একমাত্র ছেলে ইসমাইল হোসেন (১১) স্থানীয় একটি মাদরাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর রনির ছেলে ইসমাইল দাদা-দাদির সাথেই থাকে। এ অবস্থায় ছুটিতে এবার বাড়ি এসে শিমু আক্তারকে (২৫) বিয়ে করেন রনি।
ইমাম হোসেন রনির ভাই হোসেন আলী জসিম জানান, ২৫ মার্চ উমরাহ পালনের জন্য ভাইকে বিমানবন্দরে দিয়ে আসি। ঠিকঠাকমতো রনি গন্তব্যে পৌঁছে যায়। ওমরাহ পালন শেষে ১ এপ্রিল কাজে যোগদানের কথা ছিল তার। কিন্তু ২৭ তারিখ সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় সে মারা গেল।
রনির বোন হাজেরা বেগম জানান, আমার ভাইয়ের সঙ্গে শেষ কথা হয় সোমবার ইফতারের কিছুক্ষন আগে। ভাই বলেছিল, ওমরাহ শেষে কাজে যোগদান করবে। বাংলাদেশে ইফতারের সময় হয়ে গেছে বলে ফোন রেখে দেয় আমার ভাই রনি। তারপর মৃত্যুর সংবাদ পাই।
রনির বাবা আব্দুল লতিফ জানান, আমার ছেলেকে হারিয়ে আমি পাগল হয়ে গেছি। সরকারের কাছে আমার আবেদন, তাড়াতাড়ি যেন ছেলের লাশটা আমার কাছে পাঠায়।
ইমাম হোসেন রনির ছেলে ইসমাইল হোসেন বুঝে উঠতে পারছে না তার বাবা নেই। কেঁদে কেঁদে শুধু বলছে বাবা মারা গেছেন।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ আলম জানান, লাশ আসার পর সরকারি নির্দেশনা অনুসারে সব কাজ সম্পন্ন করা হবে।
Leave a Reply