শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
টঙ্গীতে ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার ॥ গানের শিক্ষক মানসুরা আক্তার জিতুকে গলা কেটে হত্যা কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় সাগরে মাছ ধরার নৌকা ডুবে একজনের মৃত্যু পানিতে ডুবে দুই ভাইবোনের মৃত্যু ফুলপুরে পুলিশের অভিযানে মোটরসাইকেল চোর গ্রেফতার গাইবান্ধা উপজেলা পরিষদ আয়োজনে পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্রেঞ্চ বিতরন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ওপেন হাউস ডে/২৩ অনুষ্ঠিত শেরপুরে জেলা আইনজীবীর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত বাড়ি ফেরা হলোনা ব্যাংক কর্মকর্তার গাইবান্ধায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার ৬৯ তম জন্মদিন পালিত টঙ্গীতে তমিজী হকের সম্মেলন স্থগিত: ফেসবুক স্ট্যাসের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে ঝাড়ু এবং মশাল মিছিল

বাংলাদেশের অপরুপ ঝর্ণা ও জলপ্রপাত

অনলাইন ডেস্ক
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১
  • ১০০ বার

একসময় বাংলাদেশের ঝর্ণা বলতে শুধুমাত্র মাধবকুণ্ড ঝর্ণার নামই প্রচলিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে আরও বেশকিছু ঝর্ণা ও জলপ্রপাত আবিষ্কৃত হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, সিলেট, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সেই সব ঝর্ণার অবস্থান। সুন্দর এসব ঝর্ণার বেশিরভাগই এখনও রয়েছে লোক চক্ষুর অন্তরালে। এছাড়া দুর্গম অঞ্চলে অবস্থানের কারণে অনেক ঝর্ণাতে যাওয়া বেশ সময় সাপেক্ষ্য এবং কষ্টকর। তবুও প্রকৃতিপ্রেমীদের সুন্দরের পথে দুঃসাহসিক যাত্রা থেমে নেই। ভ্রমণ গাইডের এই আয়োজনে জানবো বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ১০ ঝর্ণা ও জলপ্রপাত সম্পর্কে।

তিনাপ সাইতার :
বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত তিনাপ সাইতার বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে অবস্থিত। অনেকের কাছে পাইন্দু সাইতার নাম পরিচিত তিনাপ সাইতার হার্ড ট্রেকিংয়ের জন্য উপযুক্ত একটি আদর্শ জায়গা। ধৈর্য্য আর শারীরিক সামর্থ্য থাকলেই কেবল তিনাপ সাইতাররের অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তিনাপ সাইতার দেখতে হলে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়ে আবার একই পথে ফিরে আসতে হয়।

নাফাখুম জলপ্রপাত :
বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে অবস্থিত নাফাখুম জলপ্রপাত পানি প্রবাহের পরিমানের দিক থেকে বাংলাদেশের অন্যতম বড় জলপ্রপাত হিসাবে আখ্যায়িত। অনেকে এই জলপ্রপাতকে বাংলার নায়াগ্রা নামে আখ্যায়িত করেন। মারমা ভাষায় খুম মানে জলপ্রপাত। নাফাখুম যেতে হলে থানচি বাজার থেকে সাঙ্গু নদী পথে নৌকা দিয়ে রেমাক্রি যেতে হয়। আর রেমাক্রী থেকে প্রায় তিন ঘন্টা পায়ে হাটলে তবেই দেখা মিলে প্রকৃতির এই অনিন্দ্য রহস্যের।

ধুপপানি ঝর্ণা :
রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের ওড়াছড়িতে রয়েছে অনিন্দ্য সুন্দর ধুপপানি ঝর্ণা। ২০০০ সালের দিকে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এই স্থানে আরাধনা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে স্থানীয় মানুষের মাধ্যমে ঝর্ণাটি সকলের কাছে পরিচিতি লাভ করে। ধুপপানি ঝর্ণা নামের অর্থ সাদা পানির ঝর্ণা। এই ঝর্ণাটি ভূমি থেকে প্রায় ১৫০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। ধুপপানি ঝর্ণার আশেপাশে হরিণ, বুনো শুকর, বনবিড়াল এবং ভাল্লুক সহ বেশ কিছু বন্য প্রাণী বসবাস করে। প্রায় ২ কিলোমিটার দূর থেকেও এই ঝর্ণার পানি আছড়ে পড়ার শব্দ শোনা যায়।

আমিয়াখুম :
বান্দরবানের অবস্থিত আমিয়াখুম জলপ্রপাত অনেকের কাছে পরিচিত বাংলার ভূস্বর্গ হিসেবে। কেউ কেউ আবার এই আমিয়াখুমকে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত মনে করেন। সবুজ পাহাড় আর পাথরের মধ্য দিয়ে সাদা রঙের ফেনা ছড়িয়ে জলধারা বয়ে চলে। প্রবাহমান জলের শব্দতরঙ্গ আর ঝর্ণার বুনো সৌন্দর্য আজীবন মনের গেঁথে থাকার জন্য যথেষ্ট।

সাইংপ্রা ঝর্ণা :
বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলাযর কির্স তং পাহাড়ের গা বেয়ে চলা সাইংপ্রা ঝর্ণা এক অনন্য আদিম সৌন্দর্যের ধারক। এই ঝর্ণা দেখতে যাওয়া মোটেও সহজ নয়। পিচ্চিল ট্রেইল ধরে হেটে হেটে যাবার সময় প্রতি মুহুর্তেই থাকতে হয় সর্বোচ্চ সতর্কতায়। যদিও চারপাশের অপরূপ প্রকৃতি যাত্রাপথে মোটেও হতাশ করে না। আর অনিন্দ্য সুন্দর এই সাইংপ্রা ঝর্ণার রয়েছে মোট তিনটি ধাপ।

বাকলাই ঝর্ণা :
অভিযাত্রীদের মতে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু ঝর্ণার নাম বাকলাই। ঝর্ণাটির উচ্চতা প্রায় ৩৮০ ফুট। বান্দরবনের থানচি উপজেলার বাকলাই গ্রামে অবস্থিত এই ঝর্ণায় যাবার পথ বেশ দুর্গম। ফলে বান্দরবান শহর থেকে ঝর্ণা দেখে ফিরে আসতে ৪-৫ দিন সময় লেগে যায়। তাই পাহাড়ের দুর্গম পথে ভ্রমণের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া বাকলাই ঝর্ণায় যাওয়া মোটেও উচিত নয়।

জাদিপাই ঝর্ণা :
বান্দরবন জেলার রুমা উপজেলায় অবস্থিত জাদিপাই ঝর্ণা বাংলাদেশের প্রশস্ততম ঝর্ণার মধ্যে অন্যতম। আর বর্ষাকালে এই জলপ্রপাতের পানি প্রবাহের পরিমাণ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায় তখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণকারীরা জাদিপাই ঝর্ণার রূপ দেখতে আসেন। কেওক্রাডং থেকে প্রায় ২৫০০ ফুট নীচে জাদীপাই ঝর্ণার অবস্থান হওয়া সেখান থেকে পায়ে হেঁটে ঝর্ণায় যেতে প্রায় দুই ঘন্টা সময় লাগে।

খৈয়াছড়া ঝর্ণা :
সীতাকুণ্ডের মিরসরাইয়ে অবস্থিত খৈয়াছড়া ঝর্ণা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঝর্ণাগুলোর একটি। ঝর্ণার নয়টি ধাপের নান্দনিক সৌন্দর্য্য দেখে ভ্রমণপিয়াসী মানুষ মুগ্ধ হয়। গ্রামের সবুজ শ্যামল আঁকাবাঁকা মেঠো পথ আর পাহাড়ের হাতছানিতে অনন্য খৈয়াছড়ার আবেদন উপেক্ষা করা কঠিন বলেই প্রকৃতিপ্রেমীরা খৈয়াছড়া ঝর্ণাকে বাংলাদেশের ঝর্ণা রানী হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।

দামতুয়া জলপ্রপাত :
দামতুয়া ঝর্ণার হতে কয়েকশ গজ উপরে দামতুয়া জলপ্রপাতে অবস্থান। আর দামতুয়া জলপ্রপাতের ধাপগুলো যেন প্রকৃতির হাতে গড়া একেকটি অপূর্ব স্থাপত্য নিদর্শন। দামতুয়া জলপ্রপাত দেখতে হলে বান্দরবানের আলীকদম বাসস্ট্যান্ড থেকে থানচির নতুন রাস্তা ধরে প্রায় ১৭ কিলোমিটার এগিয়ে গাইডের সাহায্যে পাহাড়ি বনের আরো গভীরে যেতে হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু থানচি রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় চারপাশের অদ্ভুত সুন্দর পাহাড়ি দৃশ্য কল্পনাকে হার মানায়।

হামহাম জলপ্রপাত :
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বনাঞ্চলের গভীরে একদল পর্যটক গাইড শ্যামল দেববর্মাকে সাথে হাম হাম জলপ্রপাত আবিষ্কার করেন। ২০১০ সাল প্রকাশিত ঝর্ণাটি স্থানীয়দের কাছে চিতা ঝর্ণা হিসাবে পরিচিত। প্রায় ১৪০ ফিট উচ্চতা হতে নেমে আসা ঝর্ণার বুনো সৌন্দর্য দেখার আশায় প্রতি বর্ষায় সমগ্র সারাদেশ থেকে ভ্রমনকারীরা হামহামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

দৃষ্টি আকর্ষণ : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করে নিবেন নিশ্চয়ই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই জাতীয় আরো খবর

Categories